১৫টি দরকারি ভ্রমণ টিপস

May-09, 2019 বিডি ট্রাভেল নিউজ ডেস্ক ভ্রমণ টিপস

ভ্রমনকে সহজ করার অধিকাংশ কৌশল শিখে নেয়ার জন্য দশ বছর ধরে নিয়মিত ভ্রমণ করাই হয়তো যথেষ্ট। এমনই একজন ভ্রমণ পিপাসুর অভিজ্ঞতা থেকে ১৫টি কৌশল আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

এটা ঠিক যে, সব কিছু পরিকল্পনা করে হয় না বা খুঁটিনাটি সবকিছু আপনার পরিকল্পনায় আনতে পারবেন না। তবুও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আগে থেকেই মনের মধ্যে গুছিয়ে রাখলে ভ্রমণ হতে পারে আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের।

১. ধৈর্যশীল হওয়া
সব কিছু সব সময় পরিকল্পনা মাফিক হবে এটা আশা করা ঠিক না। বাস, ট্রেন এমন কি প্লেনের সময়সূচিতে সমস্যা হয়ে আপনার পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটতেই পারে। তাই অপ্রত্যাশিত বিলম্বের কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করতে হবে। ভ্রমণের সময় ধৈর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২. তালিকা তৈরি করা
ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ার অন্তত এক সপ্তাহ আগেই সাথে নেয়ার সকল জিনিসের একটা তালিকা মনে মনে করে ফেলতে হবে। যেটা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি সেটা লিখে ফেলতে হবে। লিখে রাখাকে অনেকে ছেলেমানুষি মনে করেন। কিন্তু বিপদে পড়ার থেকে একটু ছেলেমানুষি করাই তো ভাল, তাই না?

৩. স্থানীয় ভাষার প্রয়োজনীয় শব্দ শিখে নেয়া
অনেক ছোট ছোট শব্দ আপনাকে বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই যে দেশেই যাচ্ছেন সে দেশের ভাষায় হ্যালো, প্লিজ, সরি, থ্যাঙ্ক ইউ, টাকা, এমব্যাসি বলাটা অন্তত শিখে যাওয়া উচিৎ। কিভাবে পানি চাইতে হয়, কিভাবে ফোন করতে চাইতে হয়, কিভাবে হোটেল খোঁজার কথা বলতে হয় এমন প্রয়োজনীয় কথাবার্তা শিখে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

৪. অতিরিক্ত মোবাইল/ক্যামেরা ব্যাটারি
ভ্রমণে যাওয়াটা যেমন আনন্দের তেমনই কিছু স্মৃতি ধরে রাখতে পারাটাও আনন্দের। ভ্রমণে গেলে সাধারণত লম্বা সময়ের জন্য বাইরে থাকতে হয়। মোবাইল ও ক্যামেরার ব্যাটারি রিচার্জ করার সময় হয়ে উঠে না। তাই অতিরিক্ত ব্যাটারি বা পাওয়া ব্যাংক সাথে থাকলে অনেক কাজে আসতে পারে।

৫. গায়ে দেয়া চাদর বা বিছানা চাদর
নতুন কোন দেশে বেড়াতে গেলে সে দেশের আবহাওয়ার সাথে আপনার পরিচয় না থাকাটাই স্বাভাবিক। শীত হোক কিংবা গরম, সাথে একটা গায়ে দেয়া চাদর বা বিছানা চাদর রাখুন। বিপদের সময় নানা রকমের কাজে আসতে পারে এই চাদর।

৬. গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টের ফটোকপি 
দুর্ঘটনা কারও পক্ষে অনুমান করা সম্ভব না। যেকোনো সময় আপনার ব্যাগ বা সাইট ব্যাগ হারিয়ে যেতে পারে। তাই পাসপোর্ট, আইডি, টিকিটের মত গুরুত্বপূর্ণ কাগজের ফটোকপি সাথে রাখুন। মূল কপি ও ফটোকপি আলাদা আলাদা ব্যাগে রাখুন। যাতে একটা হারালেও আরেকটা দিয়ে নিজেকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারেন।

৭. সহজে ধোয়া ও শুকানো যায় এমন কাপড়
আপনার স্বাভাবিক জামাকাপড়ের পাশাপাশি ১/২ সেট টিশার্ট, শর্ট প্যান্ট, অন্তর্বাস সাথে রাখুন। যেগুলো খুব সহজে ধোয়া যায় ও রোদ ছাড়াই শুকানো যায়। এতে আপনি যেমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে সুরক্ষিত থাকবেন তেমনই নদী, সমুদ্র বা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার সুযোগ হয়ে গেলেও মিস করতে হবে না।

৮. কবে কি পরবেন
কবে, কখন, কোথায় যাবেন – সেটা যেমন পরিকল্পনার অংশ তার পাশাপাশি সেখানে গিয়ে কি কাপড় পরবেন সেটাও আগেই নির্ধারণ করে রাখলে ভাল হয়। পাহাড়ে যাচ্ছেন না সমুদ্রে, ইনডোর না আউটডোর, রোদ থাকবে নাকি বৃষ্টি, দিন নাকি রাত – এসবের উপর ভিত্তি করেই জামা-কাপড়ের পরিকল্পনা করতে হয়।

৯. ওষুধ, টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, সাবান, শ্যাম্পু
অনেকেই ভাবেন ওষুধ, টুথব্রাশ, টুথপেস্ট, সাবান, শ্যাম্পু এসব তো যেকোনো জায়গায় কিনতে পাওয়া যায়। পাওয়া হয়তো যায় কিন্তু সাথে থাকলে নিশ্চয়ই কোন ক্ষতি নেই? প্রয়োজনীয় সব প্রসাধনীর মিনিপ্যাক সাথে রাখুন। আর প্রয়োজনীয় ওষুধ ও বিশেষ কোন অসুস্থতা থাকলে ডাক্তারের দেয়া প্রেসক্রিপশন অবশ্যই সাথে রাখুন। প্রেসক্রিপশন সাথে না থাকলে ওষুধ নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়তে পারেন। এস্পিরিন, প্যারাসিটামল, সর্দি কাশির ওষুধ, গ্যাসের ওষুধ, ব্যান্ডেজ, এন্টিসেপ্টিক সাথে রাখুন।

১০. বাস, ট্রাম, ক্যাবের ভাড়া
গণপরিবহন ব্যবহারের আগে ভাড়া সম্পর্কে কাউন্টার কিংবা স্থানীয়দের থেকে জেনে নিন। ভণ্ড লোকের আনাগোনা কম বেশি পৃথিবীর সব দেশেই আছে। একটু যাচাই করে না নিলে ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

১১. প্লেনে পানি পান করুন
“জেট-ল্যাগ” বলে একটা কথা প্রচলিত আছে। প্লেনে চড়ে লম্বা পথ ভ্রমণ করলে অনেকের এক ধরনের অসুস্থতা দেখা দেয়। শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। এই অসুস্থতা এড়াতে প্রচুর পানি পান করুন। নইলে জেট-ল্যাগ এর কারণে আপনার ভ্রমণের প্রথম দিনটা ভেস্তে যেতে পারে।

১২. রুম নাম্বার ও হোটেল ঠিকানা
রুম নাম্বার ও হোটেল ঠিকানা মোবাইলে সেভ করে রাখুন। এমন ছোটখাটো জিনিস ভুলে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না।

১৩. পাবলিক ওয়াইফাই থেকে সাবধান
ফ্রি পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন। ব্যাংক একাউন্টে লগইন ও ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনের ব্যাপারে পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করবেন না।

১৪. ক্রেডিট কার্ড ও নগদ টাকা
ভ্রমণে গিয়ে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার ইচ্ছা থাকলে আগে থেকেই ব্যাংকের সাথে কথা বলুন। এনডোর্স করতে হলে আগেই করে ফেলুন। এছাড়া আপনার ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, নগদ টাকা আলাদা আলাদা জায়গায় আলাদা আলাদা ব্যাগে রাখুন। যাতে একটা হারালে আরেকটা দিয়ে বিপদ এড়াতে পারেন। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ নগদ টাকা ইমার্জেন্সি হিসেবে আলাদা রাখুন।

১৫. বাসার কাউকে আপনার অবস্থান জানান
আপনি কখন কোথায় আছেন বা এর পরে কোথায় যাবেন? এ ব্যাপারে বাড়িতে কাউকে মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সারাক্ষণ জানিয়ে রাখবেন। যেন কোন ধরনের বিপদ হলে আপনার সর্বশেষ অবস্থান জানা যায়।

 

Related Post