বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলতি বছর হজ কার্যক্রম পড়েছে অনিশ্চয়তায়। করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে দেয়া বিধিনিষেধ সম্প্রতি শিথিল করে সৌদি আরব। মসজিদগুলো খুলে দেয়া হয়েছে।
রোববার পবিত্র কাবা শরিফ ও মসজিদুন নববীও মুসল্লিদের জন্য ফের উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর মধ্য দিয়ে আসন্ন হজ পালনের দ্বার খুলতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের হজ সংশ্লিষ্টরা। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আবদুল্লাহ সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে পবিত্র হজের কেন্দ্রবিন্দু সৌদি আরবের পবিত্র কাবা এবং মসজিদুন নববী সাধারণ মুসল্লিদের জন্য বন্ধ রেখেছিল সৌদি সরকার। দুই মাসের বেশি সময় পর রোববার তা আবার সীমিত আকারে খুলে দিয়েছে বলে জেনেছি। আমরাও আসন্ন হজের জন্য নিবন্ধনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি।
এ বছর বাংলাদেশসহ বর্হিবিশ্বের হজযাত্রীরা হজ পালন করতে পারবে কি না, তা নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। সব বিষয় বিবেচনা করে সে সিদ্ধান্ত নেবে সৌদি সরকার। আশা করছি, তারা (সৌদি আরব) ১৫ জুনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করবে। এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজার হজযাত্রী হজ নিবন্ধন করেছেন। সৌদি সরকার চাইলে তারা সবাই এ বছর হজে যেতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ।’
এ বিষয়ে প্রায় অভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন ‘হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-হাব’ সভাপতি এম শাহাদত হোসাইন তসলিম। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও হজ সম্পন্ন হবে। তবে সীমিত পরিসরে, না ঘটা করে, তা নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বের হজপ্রত্যাশীরা পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন কি না, তার সিদ্ধান্ত দেবে সৌদি সরকার। বাংলাদেশের ৬৫ হাজার ৫১২ নিবন্ধনকারী হজযাত্রী হজের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’
করোনা পরিস্থিতির কারণে ২৭ ফেব্রুয়ারি ওমরা ও ভিজিট ভিসায় সৌদি আরবে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সৌদি সরকার। ৫ মার্চ মক্কার বাইরের লোকদেরও ওমরা পালন ও মসজিদে নববীতে গমন নিষিদ্ধ করে। পরদিনই হঠাৎ পবিত্র কাবার তাওয়াফ, সাফা মারওয়ায় সায়ি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপরই মূলত এবারের হজ কার্যক্রম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে।
প্রসঙ্গত, চাঁদ দেখাসাপেক্ষে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে হজ হতে পারে। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর মক্কায় সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ২০২০ সালের হজ চুক্তি অনুযায়ী এবার হজে যেতে পারবেন এক লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি। এর মধ্যে ১৭ হাজার ১৯৮ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়, বাকি ১ লাখ ১০ হাজার হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন। মোট হাজীর অর্ধেক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও বাকি অর্ধেক সৌদিয়া এয়ারলাইনস পরিবহন করবে।