অনেকেই তাদের প্রিয়জনকে হয়ত আদর করে নীলপরী বলে ডাকে কিন্তু বন্যপ্রাণী জগতে সত্যিই এক নীলপরী আছে। আর নীলপরীটি আমাদের দেশেও পাওয়া যায় যা দেখতে পাওয়া পাখি প্রেমিদের কাছে খুবই ভাললাগার এক মুহুর্ত।
এশীয় নীলপরীর বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ শান্ত বালিকা (গ্রিক=শান্ত; ল্যাটিন= বালিকা)।
এই পাখিটি সবসময় গাছের মগডালে এবং ঘন জঙ্গলে বেশী থাকে। প্রায় সব পাখির মত এই পাখিরও পুরুষ নারীতে ভিন্নতা আছে দৈহিক গত ভাবে। পুরুষ নীলপরী পাখিটা উজ্জল বেগুনি মিশ্রিত নীল রংয়ের এবং চোখের নীচে এবং ডানায় কালো রংএ সজ্জিত দেখতে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। মেয়ে নীলপরী একটু মলিন নীল সবুজ এবং বাদামী কালো ঠোট। পুরুষ নারী দুই পাখিটারই চোখ লাল। এর ইংরেজি নাম ফেইরি ব্লু বার্ড।মিশ্র চিরসবুজ বনে এরা বেশী থাকে। ফুলে ফলে ভরা গাছে এরা বিচরন করে বোড়ায়। ফুলের রেনু, পাকা ফল এরা খুব বেশী পছন্দ করে। জানুয়ারী থেকে জুনের মধ্যে এরা প্রেমে আবদ্ধ হয় প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। প্রতিবার ২-৩ টা ডিম পাড়ে এবং ডিমগুলি জলপাই রংয়ের এবং বাদামী ছাপযুক্ত খুব সুন্দর। মেয়ে পাখি একা একা ডিমে তা দেয়।
বাংলাদেশের মিশ্র চিরসবুজ বন এলাকা সিলেট ও চট্রগ্রামে এদের বসবাস। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, চীন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশীয়া, মলোয়েশীয়ায় এদের দেখতে পাওয়া যায়। মাইন উদ্দিন বলেন,“এই পাখিটি আমি এখন পর্যন্ত ৪ বার দেখেছি। ১ম বার সামিউল ভাইয়ের সাথে শ্রীমঙ্গল। পরের বার কাপ্তাই। ৩য় বার কাপ্তাই, ৪র্থ বার কাপ্তাই। তাই কাপ্তাই গেলে দেখার সম্ভাবনা সবথেকে বেশী।”
অপূর্ব সুন্দর এই পাখিটি বন ধ্বংসের সাথে সাথে বাংলাদেশ থেকে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন হয়ত আর এদের দেখা যাবে না। এদের সংরক্ষনে বাংলাদেশ বন বিভাগের সাথে আমাদের সবারই সচেতনতার প্রয়োজন। আর যদি এদের সংরক্ষণ না করা যায় তবে এ প্রানী ধ্বংসের সাথে সাথে আমরা পাখি প্রেমী পর্যটকদেরও হারিয়ে ফেলবো আমাদের দেশ থেকে।